বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ পূর্বাহ্ন
সিরাজ প্রামাণিকঃ কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা সদর থেকে সোজা দক্ষিণে ৮ কিলোমিটার দূরে এক্তারপুর গ্রাম। মাঝখান দিয়ে চলে গেছে একটি প্রশস্ত রাস্তা। সেই রাস্তার দুই পাশে ছড়িয়ে পড়েছে গাছটির শাখা-প্রশাখা। শিকড়ে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। প্রায় ২০০ বছরের এই গাছটি ঘিরে পূজা করে স্থানীয় হিন্দুরা। গাছতলায় আছে মন্দিরও। দিনে দিনে গাছের লতা নেমে আরো অনেক গাছের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে আবার মানত বা মনস্কামনা পূরণের জন্যও এখানে আসে।।
এই গাছটি কুষ্টিয়া জেলার খোকসায় এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। গাছতলার পাশের গ্রামের বাসিন্দা ও সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা প্রসাদ বিশ্বাস জানান, এ বটগাছটি নিয়ে এলাকায় অনেক অলৌকিক গল্প রয়েছে। তিনি তাঁর দাদার কাছে শুনেছেন, আগে এই গাছের ডালপালা কাটা যেত না, এমনকি ভয়ে কেউ পাতাও ছিঁড়ত না। একবার বটগাছের জমির মালিক গাছটি কেটে জমিতে চাষাবাদের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ওই রাতেই স্বপ্ন দেখেন যে, গাছটি কেটে ফেললে তার বংশ নির্বংশ করে দেয়া হবে। এমন ভয়ংকর স্বপ্ন দেখার পর জমি মালিক আর কখনও গাছটি কেটে ফেলানোর দুঃসাহস দেখানননি। প্রসাদ বিশ্বাস জানান, ছোট বেলায় ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া না করলে মা ওই বটগাছের নিচে এনে খাওয়া-দাওয়া করানোর ভয় দেখাতেন। এখনো অনেকে এই গাছের ডালপালা ভাঙে না। এ গ্রামের যুবক কাজল বিশ্বাস জানান, যখন বট গাছে ফল পাকে, দারুণ লাগে। লাল রঙে ছেয়ে যায় গ্রামের এ এলাকা। প্রায় ১ বিঘা জমি জুড়ে বিস্তৃত এ বটগাছটি দেখতে মানুষ প্রতিনিয়ত ভিড় জমায়।প্রায় ত্রিশ বছর আগে এখানে বিপদ রঞ্জন নামে এক আধ্যাত্মিক সাধু ধ্যান করতেন। তিনি শুধু এ বটগাছের পাতা চিবিয়ে খেয়ে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন।
এবার ঈদ পরবর্তী আড্ডার আয়োজন করেছিল ‘খোকসা ফিল্ম সোসাইটি’। এমন পাখি ডাকা, ছায়া ঢাকা ঐতিহ্যবাহী বটগাছের নিচে আড্ডার স্থান নির্ধারণ করেছিল ‘খোকসা ফিল্ম সোসাইটি’র কর্ণধার খোকসার সংস্কৃতিসেবী মনিরুজ্জামান শাহীন। ‘খোকসা ফিল্ম সোসাইটি’র সভাপতি নাহিদুজ্জামান শয়নের সভাপতিত্বে খোকসার একঝাঁক গুনী মানুষের উপস্থিতিতে হয়ে গেল প্রানবন্ত ঈদ আড্ডা। পড়ন্ত বিকেলের নিভৃত সন্ধ্যায় ফারুক আহমেদের উপস্থাপনায় আড্ডার মধ্যমনি ছিলেন খোকসার আরেক কৃতি সন্তান বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, ঢাকাস্থ খোকসা কল্যান সমিতির ধারক-বাহক আহসান নবাব, সাংবাদিক উজ্জ্বল কুমার রায় দাদা ভাই, সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি, সোহানুর রহমান সোহান, রেজা করিম, প্রসাদ বিশ্বাস প্রমুখ। অবশেষে ঢাকাস্থ খোকসা কল্যান সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, সংস্কৃতিসেবী রবিউল আলম বাবুল এর কন্ঠে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথের ‘যেদিন পড়বে মোর পায়ের চিহ্ন এ বাটে’ গান পরিবেশনের মধ্যে আড্ডাটির পরিসমাপ্তি ঘটে।